Leonardo_Lightning_XL_Create_a_visually_engaging_banner_image_2

আল্লাহ ও রাসূলের কতিপয় বিধান এবং হুদূদ/দন্ডবিধান

সূচি তালিকা

ভূমিকা

আল্লাহ ও রাসূলের বিধান এবং হুদূদ/দন্ডবিধান-এর মূল উদ্দেশ্য হলো ইসলামের শাস্ত্রবিধি, ন্যায়বিচার, এবং সমাজে নৈতিকতার আদর্শ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। ইসলামিক বিধানাবলির মধ্যে এমন কিছু অনুশাসন ও নির্দেশনা রয়েছে, যা সমাজের কল্যাণে, সুষ্ঠু শাসন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইসলামের এই বিধানগুলো আল্লাহ কর্তৃক প্রণীত এবং রাসূল (সা.)-এর মাধ্যমে মুসলিমদের জীবন পরিচালনার জন্য নির্দেশিত। হুদূদ বা দণ্ডবিধানের মাধ্যমে অপরাধ দমন, অন্যায় প্রতিরোধ এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ নির্ধারণ করা হয়েছে।

১] শপথ ভঙ্গের কাফ্ফারা

لَا يُؤَاخِذُكُمُ اللّٰهُ بِاللَّغْوِ فِيْۤ اَيْمَانِكُمْ وَلٰكِنْ يُّؤَاخِذُكُمْ بِمَا عَقَّدْتُّمُ الْاَيْمَانَ ۚ  فَكَفَّارَتُهٗۤ اِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسٰكِيْنَ مِنْ اَوْسَطِ مَا تُطْعِمُوْنَ اَهْلِيْكُمْ اَوْ كِسْوَتُهُمْ اَوْ تَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ ؕ فَمَنْ لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلٰثَةِ اَيَّامٍ ؕ ذٰلِكَ كَفَّارَةُ اَيْمَانِكُمْ اِذَا حَلَفْتُمْ ؕ وَاحْفَظُوْۤا اَيْمَانَكُمْ ؕ كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللّٰهُ لَكُمْ اٰيٰتِهٖ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ

তোমাদের বৃথা শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করবেন না, কিন্তু যেসব শপথ তোমরা ইচ্ছে করে কর সেগুলোর জন্য তিনি তোমাদেরকে পাকড়াও করবেন। ((তারপর এর *কাফফারা দশজন দরিদ্রকে মধ্যম ধরনের খাদ্য দান, যা তোমরা তোমাদের পরিজনদেরকে খেতে দাও বা তাদেরকে বস্ত্রদান কিংবা একজন দাস মুক্তি। অতঃপর যার সামর্থ নেই তার জন্য তিন দিন সিয়াম পালন। তোমরা শপথ করলে এটাই তোমাদের *শপথের *কাফফারা))। আর তোমরা তোমাদের শপথ রক্ষা করো। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা শোকর আদায় কর। [০৫:৮৯]

২] সিয়ামের বিধান

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَي الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ

(হে মুমিনগণ ! তোমাদের উপর *বিধান দেয়া হল {*সিয়ামের}), যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে দেয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়ার অধিকারী হতে পার। [০২:১৮৩]

شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيْۤ اُنْزِلَ فِيْهِ الْقُرْاٰنُ هُدًي لِّلنَّاسِ وَبَيِّنٰتٍ مِّنَ الْهُدٰي وَالْفُرْقَانِ ۚ فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ ؕ وَمَنْ كَانَ مَرِيْضًا اَوْ عَلٰي سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ اَيَّامٍ اُخَرَ ؕ يُرِيْدُ اللّٰهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيْدُ بِكُمُ الْعُسْرَ ۫ وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰي مَا هَدٰىكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ

রমাদান মাস, এতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের হেদায়াতের জন্য এবং হিদায়াতের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে। ((কাজেই *তোমাদের মধ্যে যে এ মাস পাবে সে যেন এ *মাসে *সিয়াম পালন করে))। তবে তোমাদের কেউ অসুস্থ থাকলে বা সফরে থাকলে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য সহজ চান এবং তোমাদের জন্য কষ্ট চান না। আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূর্ণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন সে জন্য তোমরা আল্লাহ্‌র মহিমা ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। [০২:১৮৫]

৩] সিয়াম ভঙ্গের কাফ্ফারা

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّ الأَخِرَ وَقَعَ عَلَى امْرَأَتِهِ فِي رَمَضَانَ فَقَالَ أَتَجِدُ مَا تُحَرِّرُ رَقَبَةً قَالَ لاَ قَالَ فَتَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ قَالَ لاَ قَالَ أَفَتَجِدُ مَا تُطْعِمُ بِهِ سِتِّينَ مِسْكِينًا قَالَ لاَ قَالَ فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِعَرَقٍ فِيهِ تَمْرٌ وَهُوَ الزَّبِيلُ قَالَ أَطْعِمْ هَذَا عَنْكَ قَالَ عَلَى أَحْوَجَ مِنَّا مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا أَهْلُ بَيْتٍ أَحْوَجُ مِنَّا قَالَ فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল, এই হতভাগা স্ত্রী সহবাস করেছে রমযানে। তিনি বললেনঃ তুমি কি একটি গোলাম আযাদ করতে পারবে? লোকটি বলল, না। তিনি বললেনঃ তুমি কি ক্রমাগত দু’মাস সিয়াম পালন করতে পারবে? লোকটি বলল, না। তিনি বললেনঃ তুমি কি ষাটজন মিসকীন খাওয়াতে পারবে? সে বলল, না। এমতাবস্থায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এক ‘আরাক অর্থাৎ এক ঝুড়ি খেজুর এল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এগুলো তোমার তরফ হতে লোকদেরকে আহার করাও। লোকটি বলল, আমার চাইতেও অধিক অভাবগ্রস্থ কে? অথচ মাদীনার উভয় লাবার অর্থাৎ হাররার মধ্যবর্তী স্থলে আমার পরিবারের চেয়ে অধিক অভাবগ্রস্থ কেউ নেই। তিনি বললেনঃ তা হলে তুমি স্বীয় পরিবারকেই খাওয়াও।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৯৩৭
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

৪] ক্বিসাসের বিধান

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِصَاصُ فِي الْقَتْلٰي ؕ اَلْحُرُّ بِالْحُرِّ وَالْعَبْدُ بِالْعَبْدِ وَالْاُنْثٰي بِالْاُنْثٰي ؕ فَمَنْ عُفِيَ لَهٗ مِنْ اَخِيْهِ شَيْءٌ فَاتِّبَاعٌۢ بِالْمَعْرُوْفِ وَاَدَآءٌ اِلَيْهِ بِاِحْسَانٍ ؕ ذٰلِكَ تَخْفِيْفٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَرَحْمَةٌ ؕ فَمَنِ اعْتَدٰي بَعْدَ ذٰلِكَ فَلَهٗ عَذَابٌ اَلِيْمٌ

(হে ঈমানদারগণ ! *নিহতদের ব্যাপারে তোমাদের উপর বিধান দেয়া হয়েছে {*ক্বিসাসের[প্রতিশোধ গ্রহণের বিধান]}))। স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন ব্যক্তি, ক্রীতদাসের বদলে ক্রীতদাস, নারীর বদলে নারী। তবে তার ভাইয়ের পক্ষ থেকে( ক্ষমা প্রদর্শন করা হলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করা ও সততার সাথে তার রক্ত-বিনিময় আদায় করা কর্তব্য। এটা তোমাদের রবের পক্ষ থেকে শিথিলতা ও অনুগ্রহ। সুতরাং এর পরও যে সীমালঙ্ঘন করে তার জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। [০২:১৭৮]

وَكَتَبْنَا عَلَيْهِمْ فِيْهَاۤ اَنَّ النَّفْسَ بِالنَّفْسِ ۙ وَالْعَيْنَ بِالْعَيْنِ وَالْاَنْفَ بِالْاَنْفِ وَالْاُذُنَ بِالْاُذُنِ وَالسِّنَّ بِالسِّنِّ ۙ وَالْجُرُوْحَ قِصَاصٌ ؕ فَمَنْ تَصَدَّقَ بِهٖ فَهُوَ كَفَّارَةٌ لَّهٗ ؕ وَمَنْ لَّمْ يَحْكُمْ بِمَاۤ اَنْزَلَ اللّٰهُ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الظّٰلِمُوْنَ

আর (তাদের উপর আমরা তাতে[কিতাবে] *অত্যাবশ্যক করে দিয়েছিলাম) যে, (*প্রাণের বদলে প্রাণ), (চোখের বদলে চোখ), (নাকের বদলে নাক), (কানের বদলে কান), (দাঁতের বদলে দাঁত) এবং (যখমের বদলে অনুরূপ যখম)। (তারপর কেউ তা ক্ষমা করলে তা তার জন্য *কাফফারা হবে)। আর (আল্লাহ যা *নাযিল করেছেন, তা দ্বারা যারা *বিচার করে না, তারাই {*যালিম}))। [০৫:৪৫]

৫] দিয়াত বা রক্তপণের বিধান

وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ اَنْ يَّقْتُلَ مُؤْمِنًا اِلَّا خَطَـًٔا ۚ وَمَنْ قَتَلَ مُؤْمِنًا خَطَـًٔا فَتَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ مُّؤْمِنَةٍ وَّدِيَةٌ مُّسَلَّمَةٌ اِلٰۤي اَهْلِهٖۤ اِلَّاۤ اَنْ يَّصَّدَّقُوْا ؕ فَاِنْ كَانَ مِنْ قَوْمٍ عَدُوٍّ لَّكُمْ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَتَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ مُّؤْمِنَةٍ ؕ وَاِنْ كَانَ مِنْ قَوْمٍۭ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ مِّيْثَاقٌ فَدِيَةٌ مُّسَلَّمَةٌ اِلٰۤي اَهْلِهٖ وَتَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ مُّؤْمِنَةٍ ۚ فَمَنْ لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ ۫ تَوْبَةً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَكَانَ اللّٰهُ عَلِيْمًا حَكِيْمًا

কোন মুমিনকে হত্যা করা অন্য কোন মুমিনের কাজ নয়, তবে ভুলবশত করলে সেটা স্বতন্ত্র; এবং কেউ কোন মুমিনকে ভুলবশত হত্যা করলে এক মুমিন দাস মুক্ত করা এবং তার পরিজনবর্গকে রক্তপণ আদায় করা কর্তব্য, যদি না তারা ক্ষমা করে। যদি সে তোমাদের শত্রু পক্ষের লোক হয় এবং মুমিন হয় তবে এক মুমিন দাস মুক্ত করা কর্তব্য। আর যদি সে এমন সম্প্রদায়ভুক্ত হয় যাদের সাথে তোমরা অংগীকারাবদ্ধ তবে তার পরিজনবর্গকে রক্তপণ আদায় ও মুমিন দাস মুক্ত করা কর্তব্য। আর যে সঙ্গতিহীন সে একাদিক্রমে দু মাস সিয়াম পালন করবে। তাওবাহ্‌র জন্য এগুলো আল্লাহর ব্যবস্থা এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। [০৪:৯২]

৬] আয়াতুম মুহারাবা বা ফাসাদের দন্ডবিধান (হুদূদ)

اِنَّمَا جَزٰٓؤُا الَّذِيْنَ يُحَارِبُوْنَ اللّٰهَ وَرَسُوْلَهٗ وَيَسْعَوْنَ فِي الْاَرْضِ فَسَادًا اَنْ يُّقَتَّلُوْۤا اَوْ يُصَلَّبُوْۤا اَوْ تُقَطَّعَ اَيْدِيْهِمْ وَاَرْجُلُهُمْ مِّنْ خِلَافٍ اَوْ يُنْفَوْا مِنَ الْاَرْضِ ؕ ذٰلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا وَلَهُمْ فِي الْاٰخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيْمٌ

যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দুনিয়ায় [ফাসাদ]ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায় তাদের শাস্তি কেবল এটাই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে বা ক্রুশবিদ্ধ করা হবে বা বিপরীত দিক থেকে তাদের হাত ও পা কেটে ফেলা হবে বা তাদেরকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে। দুনিয়ায় এটাই তাদের লাঞ্ছনা ও আখেরাতে তাদের জন্য মহাশাস্তি রয়েছে। [০৫:৩৩]

৭] চুরির দন্ডবিধান (হুদূদ)

وَالسَّارِقُ وَالسَّارِقَةُ فَاقْطَعُوْۤا اَيْدِيَهُمَا جَزَآءًۢ بِمَا كَسَبَا نَكَالًا مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَاللّٰهُ عَزِيْزٌ حَكِيْمٌ

আর পুরুষ চোর ও নারী চোর, তাদের উভয়ের হাত কেটে দাও; তাদের কৃতকর্মের ফল ও আল্লাহর পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। [০৫:৩৮]

৮] বিবাহিতদের ব্যাভিচারের দন্ডবিধান (হুদূদ)

عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ عُمَرُ ((إِنَّ اللهَ بَعَثَ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم بِالْحَقِّ وَأَنْزَلَ عَلَيْهِ الْكِتَابَ) (فَكَانَ مِمَّا *أَنْزَلَ اللهُ آيَةُ *الرَّجْمِ) (فَقَرَأْنَاهَا وَعَقَلْنَاهَا وَوَعَيْنَاهَا) (*رَجَمَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَ*رَجَمْنَا بَعْدَهُ) (*فَأَخْشَى إِنْ طَالَ بِالنَّاسِ *زَمَانٌ أَنْ يَقُولَ قَائِلٌ وَاللهِ مَا *نَجِدُ آيَةَ *الرَّجْمِ فِي كِتَابِ اللهِ (*فَيَضِلُّوا *بِتَرْكِ *فَرِيضَةٍ *أَنْزَلَهَا اللهُ) وَ([*الرَّجْمُ فِي *كِتَابِ اللهِ *حَقٌّ عَلَى مَنْ *زَنَى إِذَا *أُحْصِنَ مِنْ *الرِّجَالِ وَ*النِّسَاءِ إِذَا قَامَتْ *الْبَيِّنَةُ أَوْ كَانَ *الْحَبَلُ أَوْ *الِاعْتِرَافُ]))

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) বলেছেন, ((নিশ্চয় আল্লাহ্‌ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন, আর তাঁর উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন)। (আল্লাহ্‌র *অবতীর্ণ বিষয়াদির একটি ছিল *রজমের আয়াত)। (আমরা তা পড়েছি, বুঝেছি, আয়ত্ত করেছি)। (আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) *রজম[পাথর মেরে হত্যা] করেছেন, আমরাও তাঁর পরে *রজম করেছি)। (আমি *আশংকা করছি যে, *দীর্ঘকাল অতিবাহিত হবার পর কোন লোক এ কথা বলে ফেলতে পারে যে, আল্লাহ্‌র কসম! আমরা আল্লাহ্‌র কিতাবে *রজমের আয়াত *পাচ্ছি না)। (ফলে তারা এমন একটি *ফরয *ত্যাগের কারণে *পথভ্রষ্ট হবে, যা আল্লাহ *অবতীর্ণ করেছেন)। ([*আল্লাহ্‌র কিতাব অনুযায়ী ঐ ব্যক্তির উপর *রজম *অবধারিত, যে *বিবাহিত হবার পর *যিনা করবে, সে *পুরুষ হোক বা *নারী, যখন সুস্পষ্ট *প্রমাণ পাওয়া যাবে অথবা *গর্ভ বা *স্বীকারোক্তি পাওয়া যাবে]))।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৮২৯, ৬৮৩০
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪৩৩২
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

৯] অবিবাহিতদের ব্যাভিচারের দন্ডবিধান (হুদূদ)

اَلزَّانِيَةُ وَالزَّانِيْ فَاجْلِدُوْا كُلَّ وَاحِدٍ مِّنْهُمَا مِائَةَ جَلْدَةٍ ۪ وَّلَا تَاْخُذْكُمْ بِهِمَا رَاْفَةٌ فِيْ دِيْنِ اللّٰهِ اِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ ۚ وَلْيَشْهَدْ عَذَابَهُمَا طَآئِفَةٌ مِّنَ الْمُؤْمِنِيْنَ

ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী- তাদের প্রত্যেককে একশত বেত্রাঘাত করবে, আল্লাহ্‌র বিধান কার্যকরীকরণে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে প্রভাবান্বিত না করে, যদি তোমরা আল্লাহ্‌ এবং আখেরাতের উপর ঈমানদার হও; আর মুমিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে। [২৪:০২]

مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُ فِيمَنْ زَنَى وَلَمْ يُحْصَنْ جَلْدَ مِائَةٍ وَتَغْرِيبَ عَامٍ

যায়দ ইব্‌নু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আদেশ দিতে শুনেছি ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে একশ’ বেত্রাঘাত করার ও এক বছরের জন্য নির্বাসনের, যে অবিবাহিত অবস্থায় যিনা করেছে।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৮৩১
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

১০] অপবাদের দন্ডবিধান (হুদূদ)

وَالَّذِيْنَ يَرْمُوْنَ الْمُحْصَنٰتِ ثُمَّ لَمْ يَاْتُوْا بِاَرْبَعَةِ شُهَدَآءَ فَاجْلِدُوْهُمْ ثَمٰنِيْنَ جَلْدَةً وَّلَا تَقْبَلُوْا لَهُمْ شَهَادَةً اَبَدًا ۚ وَاُولٰٓئِكَ هُمُ الْفٰسِقُوْن

আর যারা সচ্চরিত্রা নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারপর তারা চারজন সাক্ষী নিয়ে না আসে, তাদেরকে তোমরা আশিটি বেত্রাঘাত কর এবং তোমরা কখনো তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবে না; এরাই তো ফাসেক। [২৪:০৪]

১১] পর্দার (মাহরাম ব্যতিত) বিধান

قُلْ لِّلْمُؤْمِنِيْنَ يَغُضُّوْا مِنْ اَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوْا فُرُوْجَهُمْ ؕ ذٰلِكَ اَزْكٰي لَهُمْ ؕ اِنَّ اللّٰهَ خَبِيْرٌۢ بِمَا يَصْنَعُوْنَ

((*মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের *দৃষ্টিকে *সংযত করে) এবং (তাদের *লজ্জাস্থানের *হেফাযত করে); (এটাই তাদের জন্য অধিক *পবিত্র))। [২৪:৩০]

وَقُلْ لِّلْمُؤْمِنٰتِ يَغْضُضْنَ مِنْ اَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوْجَهُنَّ وَلَا يُبْدِيْنَ زِيْنَتَهُنَّ اِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلٰي جُيُوْبِهِنَّ ۪ وَلَا يُبْدِيْنَ زِيْنَتَهُنَّ اِلَّا لِبُعُوْلَتِهِنَّ اَوْ اٰبَآئِهِنَّ اَوْ اٰبَآءِ بُعُوْلَتِهِنَّ اَوْ اَبْنَآئِهِنَّ اَوْ اَبْنَآءِ بُعُوْلَتِهِنَّ اَوْ اِخْوَانِهِنَّ اَوْ بَنِيْۤ اِخْوَانِهِنَّ اَوْ بَنِيْۤ اَخَوٰتِهِنَّ اَوْ نِسَآئِهِنَّ اَوْ مَا مَلَكَتْ اَيْمَانُهُنَّ اَوِ التّٰبِعِيْنَ غَيْرِ اُولِي الْاِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ اَوِ الطِّفْلِ الَّذِيْنَ لَمْ يَظْهَرُوْا عَلٰي عَوْرٰتِ النِّسَآءِ ۪ وَلَا يَضْرِبْنَ بِاَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِيْنَ مِنْ زِيْنَتِهِنَّ ؕ وَتُوْبُوْۤا اِلَي اللّٰهِ جَمِيْعًا اَيُّهَ الْمُؤْمِنُوْنَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ

((আর মুমিন *নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের *দৃষ্টিকে *সংযত করে) এবং (তাদের *লজ্জাস্থানের *হেফাযত করে); আর (তারা যেন তাদের *সৌন্দর্য *প্রদর্শন না করে, যা *প্রকাশিত হয় তা ছাড়া)। আর (তারা তাদের *গলা ও বুক যেন *খিমার দ্বারা *ঢেকে রাখে)। আর (তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীরা, তাদের মালিকানাধীন দাস-দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা-রহিত পুরুষ এবং নারীদের *গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে *অজ্ঞ *বালক ছাড়া কারো কাছে তাদের *সৌন্দর্য *প্রদর্শন না করে), (তারা যেন তাদের *গোপন *সৌন্দর্য *জানানোর জন্যে *সজোরে *পদচারণা না করে)) হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। [২৪:৩১]

وَقَرْنَ فِى بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ ٱلْجَٰهِلِيَّةِ ٱلْأُولَىٰۖ وَأَقِمْنَ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتِينَ ٱلزَّكَوٰةَ وَأَطِعْنَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥٓۚ إِنَّمَا يُرِيدُ ٱللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ ٱلرِّجْسَ أَهْلَ ٱلْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا

((আর তোমরা নিজ *ঘরে *অবস্থান করবে) এবং (প্রাচীন *জাহেলী যুগের *প্রদর্শনীর মত নিজেদেরকে *প্রদর্শন করো না)। আর (তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং আল্লাহ্ তাঁর রাসূলের অনুগত থাক); (হে নবী-পরিবার! আল্লাহ্ তো শুধু চান তোমাদের থেকে *অপবিত্রতা *দূর করতে এবং তোমাদেরকে *সম্পূর্ণরূপে *পবিত্র করতে))। [৩৩:৩৩]

# হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ مُوَرِّقٍ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَال ‏((الْمَرْأَةُ{*عَوْرَةٌ}) (فَإِذَا خَرَجَتِ *اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ))

আব্দুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ((মহিলারা হচ্ছে {*আওরাত [আবরণীয় বস্তু]})। (সে বাইরে বের হলে শাইতান তাকে *সুশোভিত করে তোলে))।
জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ১১৭৩
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

# উম্মুল মু’মিনিনগণের জন্য পর্দার বিধান

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لَا تَدْخُلُوا۟ بُيُوتَ ٱلنَّبِىِّ إِلَّآ أَن يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَىٰ طَعَامٍ غَيْرَ نَٰظِرِينَ إِنَىٰهُ وَلَٰكِنْ إِذَا دُعِيتُمْ فَٱدْخُلُوا۟ فَإِذَا طَعِمْتُمْ فَٱنتَشِرُوا۟ وَلَا مُسْتَـْٔنِسِينَ لِحَدِيثٍۚ إِنَّ ذَٰلِكُمْ كَانَ يُؤْذِى ٱلنَّبِىَّ فَيَسْتَحْىِۦ مِنكُمْۖ وَٱللَّهُ لَا يَسْتَحْىِۦ مِنَ ٱلْحَقِّۚ وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَٰعًا فَسْـَٔلُوهُنَّ مِن وَرَآءِ حِجَابٍۚ ذَٰلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّۚ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَن تُؤْذُوا۟ رَسُولَ ٱللَّهِ وَلَآ أَن تَنكِحُوٓا۟ أَزْوَٰجَهُۥ مِنۢ بَعْدِهِۦٓ أَبَدًاۚ إِنَّ ذَٰلِكُمْ كَانَ عِندَ ٱللَّهِ عَظِيمًا

((হে ঈমানদারগণ! তোমরা তাঁর (রাসূলের) পত্নীদের কাছ থেকে কিছু চাইলে {*পর্দার আড়াল} থেকে চাইবে)। (এ বিধান *তোমাদের ও তাদের *হৃদয়ের জন্য বেশী *পবিত্ৰ)। আর (তোমাদের কারো পক্ষে আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া সংগত নয়) এবং (তাঁর [মৃত্যুর] পর তাঁর *স্ত্রীদেরকে *বিয়ে করা তোমাদের জন্য *কখনো [বৈধ] নয়)। (নিশ্চয় আল্লাহর কাছে এটা *গুরুতর [অপরাধ]))। [৩৩:৫৩]

يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ قُل لِّأَزْوَٰجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَآءِ ٱلْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَٰبِيبِهِنَّۚ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰٓ أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا

((হে নবী! আপনি আপনার *স্ত্রীদেরকে, *কন্যাদেরকে ও মুমিনদের *নারীদেরকে বলুন, তারা যেন {তাদের *চাদরের কিছু অংশ} {নিজেদের উপর *টেনে দেয়})। (এতে তাদেরকে *চেনা *সহজতর হবে) (ফলে তাদেরকে *উত্যক্ত করা হবে না)। আর (আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু))। [৩৩:৫৯]

# দেবর/ভাসরের সাথে পর্দার বিধান

قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا لَيْثٌ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ عَنْ أَبِي الْخَيْرِ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِيَّاكُمْ وَالدُّخُولَ عَلٰى النِّسَاءِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَرَأَيْتَ الْحَمْوَ قَالَ (*الْحَمْوُ *الْمَوْتُ)

‘উকবাহ ইব্‌নু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মহিলাদের নিকট একাকী যাওয়া থেকে বিরত থাক। এক আনসার জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! দেবরের ব্যাপারে কি হুকুম? তিনি বললেনঃ (*দেবর হচ্ছে *মৃত্যু)।
ব্যাখ্যা: (الْحَمْوُ) শব্দের অর্থের ব্যাপারে ইমাম তিরমিযী বলেছেন- ‘হামউ’ মানে স্বামীর ভাই-ছোট হোক বা বড়।
সহীহ বুখারী, হাদিস নং ৫২৩২
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

১২] বিবাহ হারাম (মাহরাম) হওয়ার বিধান

حُرِّمَتْ عَلَيْكُمْ أُمَّهَٰتُكُمْ وَبَنَاتُكُمْ وَأَخَوَٰتُكُمْ وَعَمَّٰتُكُمْ وَخَٰلَٰتُكُمْ وَبَنَاتُ ٱلْأَخِ وَبَنَاتُ ٱلْأُخْتِ وَأُمَّهَٰتُكُمُ ٱلَّٰتِىٓ أَرْضَعْنَكُمْ وَأَخَوَٰتُكُم مِّنَ ٱلرَّضَٰعَةِ وَأُمَّهَٰتُ نِسَآئِكُمْ وَرَبَٰٓئِبُكُمُ ٱلَّٰتِى فِى حُجُورِكُم مِّن نِّسَآئِكُمُ ٱلَّٰتِى دَخَلْتُم بِهِنَّ فَإِن لَّمْ تَكُونُوا۟ دَخَلْتُم بِهِنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ وَحَلَٰٓئِلُ أَبْنَآئِكُمُ ٱلَّذِينَ مِنْ أَصْلَٰبِكُمْ وَأَن تَجْمَعُوا۟ بَيْنَ ٱلْأُخْتَيْنِ إِلَّا مَا قَدْ سَلَفَۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَّحِيمًا

তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা, মেয়ে, বোন, ফুফু, খালা, ভাইয়ের মেয়ে, বোনের মেয়ে, দুধমা, দুধবোন, শাশুড়ি ও তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যার সাথে সংগত হয়েছ তার আগের স্বামীর ঔরসে তার গর্ভজাত মেয়ে, যারা তোমাদের অভিভাবকত্বে আছে; তবে যদি তাদের সাথে সংগত না হয়ে থাক তাতে তোমাদের কোন অপরাধ নেই। আর তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ তোমাদের ঔরসজাত ছেলের স্ত্রী ও দুই বোনকে একত্র করা; আগে যা হয়েছে তা ভিন্ন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [০৪:২৩]

وَٱلْمُحْصَنَٰتُ مِنَ ٱلنِّسَآءِ إِلَّا مَا مَلَكَتْ أَيْمَٰنُكُمْۖ كِتَٰبَ ٱللَّهِ عَلَيْكُمْۚ وَأُحِلَّ لَكُم مَّا وَرَآءَ ذَٰلِكُمْ أَن تَبْتَغُوا۟ بِأَمْوَٰلِكُم مُّحْصِنِينَ غَيْرَ مُسَٰفِحِينَۚ فَمَا ٱسْتَمْتَعْتُم بِهِۦ مِنْهُنَّ فَـَٔاتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِيضَةًۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا تَرَٰضَيْتُم بِهِۦ مِنۢ بَعْدِ ٱلْفَرِيضَةِۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا

আর নারীদের মধ্যে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী ছাড়া সব সধবা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ, তোমাদের জন্য এগুলো আল্লাহর বিধান। উল্লেখিত নারীগণ ছাড়া অন্য নারীকে অর্থব্যয়ে বিয়ে করতে চাওয়া তোমাদের জন্য বৈধ করা হল, অবৈধ যৌন সম্পর্কের জন্য নয়। তাদের মধ্যে যাদেরকে তোমরা সম্ভোগ করেছ তাদের নির্ধারিত মাহ্‌র অর্পণ করবে। মাহ্‌র নির্ধারণের পর কোন বিষয়ে পরস্পর রাযী হলে তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। [০৪:২৪]

১৩] মীরাস (উত্তরাধিকার/ওয়ারিস)-এর বিধান

يُوصِيكُمُ ٱللَّهُ فِىٓ أَوْلَٰدِكُمْۖ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ ٱلْأُنثَيَيْنِۚ فَإِن كُنَّ نِسَآءً فَوْقَ ٱثْنَتَيْنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَۖ وَإِن كَانَتْ وَٰحِدَةً فَلَهَا ٱلنِّصْفُۚ وَلِأَبَوَيْهِ لِكُلِّ وَٰحِدٍ مِّنْهُمَا ٱلسُّدُسُ مِمَّا تَرَكَ إِن كَانَ لَهُۥ وَلَدٌۚ فَإِن لَّمْ يَكُن لَّهُۥ وَلَدٌ وَوَرِثَهُۥٓ أَبَوَاهُ فَلِأُمِّهِ ٱلثُّلُثُۚ فَإِن كَانَ لَهُۥٓ إِخْوَةٌ فَلِأُمِّهِ ٱلسُّدُسُۚ مِنۢ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصِى بِهَآ أَوْ دَيْنٍۗ ءَابَآؤُكُمْ وَأَبْنَآؤُكُمْ لَا تَدْرُونَ أَيُّهُمْ أَقْرَبُ لَكُمْ نَفْعًاۚ فَرِيضَةً مِّنَ ٱللَّهِۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا

আল্লাহ তোমাদের সন্তান সম্বন্ধে নির্দেশ দিচ্ছেন: এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান; কিন্তু শুধু কন্যা দুইয়ের বেশি থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দু’ভাগ, আর মাত্র এক কন্যা থাকলে তার জন্য অর্ধেক। তার সন্তান থাকলে তার পিতা-মাতা প্রত্যেকের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ; সে নিঃসন্তান হলে এবং পিতা-মাতাই উত্তরাধিকারী হলে তার মাতার জন্য তিন ভাগের এক ভাগ; তার ভাই-বোন থাকলে মাতার জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ; এ সবই সে যা ওসিয়ত করে তা দেয়ার এবং ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও সন্তানদের মধ্যে উপকারে কে তোমাদের নিকটতর তা তোমরা জান না। এ বিধান আল্লাহর; নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। [০৪:১১]

وَلَكُمْ نِصْفُ مَا تَرَكَ أَزْوَٰجُكُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّهُنَّ وَلَدٌۚ فَإِن كَانَ لَهُنَّ وَلَدٌ فَلَكُمُ ٱلرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْنَۚ مِنۢ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصِينَ بِهَآ أَوْ دَيْنٍۚ وَلَهُنَّ ٱلرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْتُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّكُمْ وَلَدٌۚ فَإِن كَانَ لَكُمْ وَلَدٌ فَلَهُنَّ ٱلثُّمُنُ مِمَّا تَرَكْتُمۚ مِّنۢ بَعْدِ وَصِيَّةٍ تُوصُونَ بِهَآ أَوْ دَيْنٍۗ وَإِن كَانَ رَجُلٌ يُورَثُ كَلَٰلَةً أَوِ ٱمْرَأَةٌ وَلَهُۥٓ أَخٌ أَوْ أُخْتٌ فَلِكُلِّ وَٰحِدٍ مِّنْهُمَا ٱلسُّدُسُۚ فَإِن كَانُوٓا۟ أَكْثَرَ مِن ذَٰلِكَ فَهُمْ شُرَكَآءُ فِى ٱلثُّلُثِۚ مِنۢ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصَىٰ بِهَآ أَوْ دَيْنٍ غَيْرَ مُضَآرٍّۚ وَصِيَّةً مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَلِيمٌ

তোমাদের স্ত্রীদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধেক তোমাদের জন্য, যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে এবং তাদের সন্তান থাকলে তোমাদের জন্য তাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির চার ভাগের এক ভাগ; ওসিয়াত পালন এবং ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের সন্তান না থাকলে তাদের জন্য তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির চার ভাগের এক ভাগ, আর তোমাদের সন্তান থাকলে তাদের জন্য তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ; তোমরা যা ওসিয়াত করবে তা দেয়ার পর এবং ঋণ পরিশোধের পর। আর যদি কোন পুরুষ অথবা নারীর ‘কালালাহ’ বা পিতা-মাতা ও সন্তানহীন উত্তরাধিকারী হয়, আর থাকে তার এক বৈপিত্রেয় ভাই বা বোন, তবে প্রত্যেকের জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ। তারা এর বেশি হলে সবাই সমান অংশীদার হবে তিন ভাগের এক ভাগে; এটা যা ওসিয়াত করা হয় তা দেয়ার পর এবং ঋণ পরিশোধের পর, কারো ক্ষতি না করে। এ হচ্ছে আল্লাহর নির্দেশ। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল। [০৪:১২]

উপসংহার

“আল্লাহ ও রাসূলের বিধান এবং হুদূদ/দন্ডবিধান” ইসলামের নৈতিকতা, সুবিচার ও মানবিক মূল্যবোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করে। এসব বিধানের মূল লক্ষ্য হলো সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, অপরাধ প্রতিরোধ এবং শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে ইসলামী বিধানাবলির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং সঠিকভাবে তা পালন করা অপরিহার্য। ইসলামের দৃষ্টিতে হুদূদ আইন কেবল শাস্তি প্রদানই নয়, বরং সমাজে সঠিক পথে পরিচালিত করার একটি মাধ্যম।

Facebook
Email
Telegram
Full Name*
Email Address*
Set Username*
Set Password*